বাংলা মাতৃভাষা হলেও, সঠিক চর্চার অভাবে আমাদের বাংলা বাক্য বলা ও লেখার ক্ষেত্রে ভুলের অন্ত নেই। আসুন, একটু সময় হাতে নিয়ে অনুশীলন করি। সকল আগ্রহী পাঠককে অগ্রিম ধন্যবাদ।
আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে 'অশুদ্ধ' অংশটুকু লাল রঙের ও আন্ডারলাইন করে দেয়া হলো।
বাংলা ক্লাস- ১ |
এখান থেকে শুরু:-
অশুদ্ধবাক্য : রহিম ছেলেদের মধ্যে কনিষ্ঠতম/ তর।
শুদ্ধবাক্য : রহিম ছেলেদের মধ্যে কনিষ্ঠ।
অশুদ্ধবাক্য : আপনি সদাসর্বদা জনগণের মঙ্গল চেয়েছেন।
শুদ্ধবাক্য : আপনি সর্বদা/ সব সময় জনগণের মঙ্গল চেয়েছেন।
অশুদ্ধবাক্য : শুনেছি আপনি স্বস্ত্রীক ঢাকায় থাকেন।
শুদ্ধবাক্য : শুনেছি আপনি সস্ত্রীক/স্ত্রীসহ ঢাকায় থাকেন।
অশুদ্ধবাক্য : আপনি জনগণের হয়েও তাদের পক্ষে সাক্ষী দেননি।
শুদ্ধবাক্য : আপনি জনগণের হয়েও তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেননি।
অশুদ্ধবাক্য : ঘটনাটি শুনে আপনি তো উদ্বেলিত হয়ে পড়েছিলেন।
শুদ্ধবাক্য : ঘটনাটি শুনে আপনি তো উদ্বেল হয়েছিলেন।
অশুদ্ধবাক্য : বাসের ধাক্কায় তিনি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
শুদ্ধবাক্য : বাসের ধাক্কায় তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
অশুদ্ধবাক্য : আপনার এলাকার উন্নয়নের জন্য আপনি দিবারাত্রি পরিশ্রম করেছেন।
শুদ্ধবাক্য : আপনার এলাকার উন্নয়নের জন্য আপনি দিবারাত্র/ দিনরাত পরিশ্রম করেছেন।
অশুদ্ধবাক্য : শুধু নিজের না, দেশের উৎকর্ষতা সাধন করা প্রত্যেকেরই উচিত।
শুদ্ধবাক্য : শুধু নিজের না, দেশের উৎকর্ষ সাধন করা প্রত্যেকেরই উচিত।
অশুদ্ধবাক্য : বেশি চাতুর্যতা দেখাতে গিয়ে শেষে নিজেই দল থেকে বাদ পড়লেন।
শুদ্ধবাক্য : বেশি চাতুর্য/ চতুরতা দেখাতে গিয়ে শেষে নিজেই দল থেকে বাদ পড়লেন।
অশুদ্ধবাক্য : তার কথার মাধুর্যতা নাই।
শুদ্ধবাক্য : তার কথার মাধুর্য বা মধুরতা নাই।
অশুদ্ধবাক্য : ঢাকা দিন দিন তার ভারসাম্যতা হারিয়ে ফেলছে।
শুদ্ধবাক্য : ঢাকা দিন দিন তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে।
অশুদ্ধবাক্য : অন্য কোন উপায়ন্ত না দেখে তাঁরা গুলি ছুড়তে লাগল।
শুদ্ধবাক্য : অন্য কোন উপায় না দেখে তাঁরা গুলি ছুড়তে লাগল।
অশুদ্ধবাক্য : অনুমতি ছাড়া কারখানায় ঢুকা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
শুদ্ধবাক্য : অনুমতি ছাড়া কারখানায় ঢুকা আইনত দণ্ডনীয়/ (অথবা, আইনত অপরাধ)।
অশুদ্ধবাক্য : এত বড় মানুষ হয়েও আপনার সৌজন্যতার কমতি নাই।
শুদ্ধবাক্য : এত বড় মানুষ হয়েও আপনার সৌজন্যের কমতি নাই।
অশুদ্ধবাক্য : আগুনের দ্বারা নিভে গেছে কতগুলো প্রাণ।
শুদ্ধবাক্য : আগুনে নিভে গেছে কতগুলো প্রাণ।
সচেতনভাবেই হোক আর অবচেতনভাবেই হোক অনেক লেখক/ কবি/ সাধারণ মানুষ একটি বাক্যে দুবার বা তিনবার বহুচিহ্ন ব্যবহার করে বাক্যের গুণ নষ্ট করে। যেমন: গ্রামগুলো সব, লক্ষ লক্ষ শিশুগুলো সব, সব রাজাকারদের, সকল যুদ্ধাপরাধীদের ইত্যাদি। ‘কিছু’ ব্যবহার হলে পরে বহুবচন হয় না। যেমন:- 'কিছু লোকদের' না হয়ে হবে 'কিছু লোক'। বচন ঘাটতি বা বাহুল্যের কারণেও বচন ভুল হতে পারে। যেমন:-
অশুদ্ধবাক্য : সকল/ সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করেছে জনতা।
শুদ্ধবাক্য : সকল/ সমস্ত যুদ্ধাপরাধীর বিচার দাবি করেছে জনতা।
অশুদ্ধবাক্য : এবারও সদরপুর সরকারি কলেজের সব ছাত্ররা খারাপ রেজাল্ট করেছে।
শুদ্ধবাক্য : এবারও সদরপুর সরকারি কলেজের সব ছাত্র/ (অথবা, ছাত্ররা) খারাপ রেজাল্ট করেছে।
অশুদ্ধবাক্য : লক্ষ লক্ষ জনতারা সব সভায় উপস্থিত হয়েছিল।
শুদ্ধবাক্য : লক্ষ লক্ষ জনতা সভায় উপস্থিত হয়েছিল।
অশুদ্ধবাক্য : সব পাখিরা ঘর বাঁধে না।
শুদ্ধবাক্য : সব পাখি ঘর বাঁধে না।
অশুদ্ধবাক্য : যেসব ছাত্রদের নিয়ে কথা তারা বখাটে।
শুদ্ধবাক্য : যেসব ছাত্রকে নিয়ে কথা তারা বখাটে।
অশুদ্ধবাক্য : ক্লাসে যে ১০ জন ছাত্র আছে তার মধ্যে ৮ জনই ভালো ছাত্র।
শুদ্ধবাক্য : ক্লাসে যে ১০ জন ছাত্র আছে তাদের মধ্যে ৮ জনই ভালো ছাত্র।
অশুদ্ধবাক্য : কিছু কিছু মানুষ আছে যে অন্যের ভালো দেখতে পারে না।
শুদ্ধবাক্য : কিছু কিছু মানুষ আছে যারা অন্যের ভালো দেখতে পারে না।
অশুদ্ধবাক্য : প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রীবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শুদ্ধবাক্য : প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
অশুদ্ধবাক্য : এটি সার্বজনীন ব্যাপার।
শুদ্ধবাক্য : এটি সর্বজনীন ব্যাপার।
অশুদ্ধবাক্য : রহিমসহ অরো অনেকেই আছেন এই নাটকে।
শুদ্ধবাক্য : রহিমসহ অনেকেই আছেন এই নাটকে।
(চলবে......)
কবি ও কথাশিল্পী |
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, সদরপুর সরকারি কলেজ , ফরিদপুর
তথ্যসূত্র
ইন্টারনেট (গুগল, উইকিপিডিয়া, অনলাইনে প্রকাশিত বাংলা ব্যাকরণ ও অভিধান)
Many many thanks
ReplyDelete